ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India Focused

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India :—পরিবহন কাকে বলে??যে ব্যবস্থার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানের ব্যবধানকে সময়ের নিরিখে কমানো হয়, তাকেই পরিবহণ বলে।

পরিবহণের গুরুত্ব বহুমুখী, যেমন:— (১) যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছোনো, (২) চিঠিপত্র বা পার্সেল নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেওয়া, (৩) বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদন স্থল থেকে বাজারে নিয়ে যাওয়া, (৪) শিল্পের কাঁচামাল তার উৎস থেকে শিল্পকেন্দ্রে বয়ে নিয়ে যাওয়া, (৫) খাদ্য বা অন্যান্য জিনিস, উদ্‌বৃত্ত এলাকা থেকে ঘাটতি এলাকায় নিয়ে গিয়ে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, (৬) অসুস্থ মানুষকে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া এবং রোজকারের সন্ধানে জনতাকে কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

আধুনিক দুনিয়ায় পরিবহণের অনেক মাধ্যম রয়েছে। বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের রেলগাড়ি, জলপথে সাবেকি নৌকা, মোটরচালিত দ্রুতগামী নৌকা, স্টিমার, জাহাজ বা ডুবোজাহাজ, আকাশপথে বিমান বা হেলিকপ্টার এ সবই পরিবহণের মাধ্যম। সড়কপথে এই মাধ্যমের বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি।

স্থলপথের সর্বশ্রেষ্ঠ পরিবহণ মাধ্যম হল রেলপথ। দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে রেলপথ সবার আগে। সুলভ, দ্রুতগামী, আরামদায়ক ও নিরাপদ পরিবহণ ব্যবস্থা, বেশি দূরত্বে দ্রুত যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের সুবিধা, অল্পসময়ে একসঙ্গে অনেক পণ্য পরিবহণ করা রেলপথ এর মাধ্যমেই হয়।

স্থলপথে যেসব পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তার মধ্যে সড়কপথ হল প্রধান ও প্রাচীন। ভারতের সড়কপথগুলিকে মোটামুটি ৭টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়- (১) জাতীয় সড়কপথ, (২) রাজ্য সড়কপথ, (৩) এক্সপ্রেসওয়ে ও এক্সপ্রেস হাইওয়ে, (৪) সীমান্ত সড়কপথ, (৫) জেলা সড়কপথ, (৬) গ্রাম্য সড়কপথ, (৭) আন্তর্জাতিক সড়কপথ।

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India

দেশের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন শহর ও নগর অঞ্চলের মধ্যে যে সড়কপথের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা হয় তাকে বলে রাজ্য সড়কপথ। এগুলি বিভিন্ন রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। এইসব সড়কপথ জাতীয় সড়কপথের সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১,৮৬,৯০৮ কিমি দীর্ঘ রাজ্য সড়ক নির্মিত হয়েছে। এই ধরনের রাস্তা নির্মাণের উদ্দেশ্য হল জাতীয় সড়ক, জেলা সদর, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ শহর, পর্যটন কেন্দ্র ও ছোটো বন্দরকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করা। ২০২২ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মোট ১৭টি রাজ্য সড়ক নির্মিত হয়েছে, যাদের মোট দৈর্ঘ্য হল ৪,৯৭১ কিমি। এগুলি SH বলে লেখা হয়, যেমন: SH4 (ঝালদা-দীঘা) পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম রাজ্য সড়কপথ (দৈর্ঘ্য ৪৬৬ কিমি)।

(১) সুলভ, দ্রুতগামী আরামদায়ক ও নিরাপদ পরিবহণ ব্যবস্থা,

(২) কম দূরত্বে দ্রুত যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ,

(৩) প্রয়োজনমতো বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ,

(৪) কর্মসংস্থানের সুবিধা,

(৫) পাহাড়ি অঞ্চল ও দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর পরিবহণে বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ।।

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India

উন্মুক্ত মহাসাগর, সাগর, উপসাগর, উপহ্রদ এবং স্থলভাগের মাঝে প্রবাহিত নদী ও অবস্থিত হ্রদসমূহকে যে পরিবহণ ব্যবস্থা যুক্ত করে, তাকে জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা বলে। ভারতে প্রধানত দু-ধরনের জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা দেখা যায়___

যেমন: (১) অভ্যন্তরীণ জলপথ: অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের মধ্যে অবস্থিত নদী, খাল ও হ্রদের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করা হয়। ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের মোট দৈর্ঘ্য হল ২০,২৩৬ কিমি যার মধ্যে ১৭,৯৮০ কিলোমিটার হল নদীপথ এবং ২,২৫৬ কিলোমিটার খালপথ।

এই সমস্ত জলপথের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল (1)গঙ্গা-ভাগীরথী-হুগলি নদী (ভারতের দীর্ঘতম অভ্যন্তরীণ জলপথ দৈর্ঘ্য ১,৬২০ কিমি), (ii) ব্রহ্মপুত্র নদ, (iii) বরাকর নদী, (iv) গোয়ার মাণ্ডবী নদী, (v) কেরলের পশ্চাদ্বর্তী জলাভূমি, (vi) মুম্বাইসংলগ্ন নদীসমূহ এবং (৭) গোদাবরী-কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ অঞ্চল। দেশি নৌকা ও মোটরচালিত জলযানের মাধ্যমে এইসব জলপথে বছরে ৮৮,০০০,০০০ টন পণ্য পরিবাহিত হয়। ভারতে মোট ছ-টি জাতীয় জলপথ আছে। অভ্যন্তরীণ জলপথের দৈর্ঘ্যের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ভারতে প্রথম (দৈর্ঘ্য ৪,৬০০ কিমি)।

উন্মুক্ত সাগর, উপসাগরের ওপর দিয়ে যে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পণ্যদ্রব্যাদির পরিবহণ করা হয়, তাকে সামুদ্রিক পথ বলে। আবার দুটি দেশের জলপথের মাধ্যমে পণ্যদ্রব্যাদি আদানপ্রদান করাকে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ বলে।

উপকূলরেখা থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত হল ভারতের জলসীমা।

কলকাতা ও চেন্নাই থেকে পোর্ট ব্লেয়ার পর্যন্ত পণ্য ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করে। ভারতের পশ্চিম উপকূলের বন্দরগুলি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশসমূহ এবং সুয়েজ খাল মারফত পাশ্চাত্য দেশগুলির মধ্যে জাহাজ চলাচল করে।

জলপথ পরিবহণে ভারত বিশ্বে সপ্তদশ স্থান অধিকার করে। ভারতে ১৪টি প্রধান বা প্রথম শ্রেণির বন্দর ও ২০৫টি অপ্রধান বন্দর রয়েছে।NW 1 –(গঙ্গা-ভাগীরথী-হুগলি ১৬২০কিমি হলদিয়া-এলাহাবাদ)

NW 2– (ব্রহ্মপুত্র – ৮৯১ কিমি -সাদিয়া-ধুবড়ি)

NW 3 — (পশ্চিম উপকূল খাল-২০৫ কিমি -কোল্লাম-কোট্রাপুরম)

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
ভর্তির জন্য যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে — ক্লিক করুন

মুম্বাই বন্দর :– মহারাষ্ট্র (ভারতের বৃহত্তম বন্দর ও ভারতের ‘প্রবেশদ্বার’)

মুদ্রা বন্দর :– গুজরাট (বৃহত্তম ব্যক্তিগত বন্দর)

কান্ডালা বন্দর :–গুজরাট (শুল্কমুক্ত বন্দর)

জওহরলাল নেহরু বা নভসেবা বন্দর :–মহারাষ্ট্র (অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বন্দর)

কলকাতা- হলদিয়া বন্দর :–পশ্চিমবঙ্গ (পূর্ব ভারতের বৃহত্তম নদীবন্দর)

চেন্নাই বন্দর :– তামিলনাড়ু(দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম বন্দর)

কোচিন বন্দর –কেরল (আরব সাগরের বন্দর)

বিশাখাপত্তনম–অন্ধ্রপ্রদেশ (পোতাশ্রয়ের বন্দর পূর্ব-উপকূলের একমাত্র স্বাভাবিক বন্দর )

মার্মাগাঁও বন্দর — গোয়া (লোহা রফতানির জন্য বিখ্যাত)

এন্নোর– তামিলনাড়ু (নবনির্মিত বন্দর)

নিউ ম্যাঙ্গালোর– কর্ণাটক (কফি রফতানির জন্য বিখ্যাত)

বর্তমান শতাব্দীতে বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক রূপান্তর ঘটিয়েছে। আকাশপথে পরিবহণের মাধ্যমে সর্বত্র, খুব দ্রুতগতিতে পৌঁছে যাওয়া যায়। বাণিজ্যের প্রসার, বিশেষ ধরনের পণ্য (কম ওজনের পণ্য) পরিবহণে, দেশরক্ষার কাজে, দুর্যোগের সময় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে, বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করতে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় ইত্যাদির জন্য আকাশপথে পরিবহণের গুরুত্ব অপরিসীম।

ভারতের কোন রাজ্য কি জন্য বিখ্যাত জানতে -- ক্লিক করুন 
নিয়মিত আমাদের পোস্ট এর আপডেট পেতে জয়েন করুন --  Click Here

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India

ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা pdf |1 Transport and communication system of India

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

Leave a Comment

error: Content is protected !!
Narendrapur Ramakrishna Mission Gk