Applied Chemistry Class 12 important Notes

Applied Chemistry Class XII important Notes //সাধারণ অ্যান্টিসেপটিক ও ডিসইনফেকট্যান্ট (Common antisceptic and disinfectant)

অ্যান্টিসেপটিকের সংজ্ঞা: যেসব রাসায়নিক পদার্থ জীবদেহের সংক্রামক জীবাণু ধ্বংস করে এবং জীবদেহে এদের বৃদ্ধি ও প্রবেশ প্রতিহত করে, কিন্তু জীবদেহে টিস্যুর কোনো ক্ষতি করে না তাদের অ্যান্টিসেপটিক (antisceptic) বা পচন নিবারক বলে। এগুলি আঘাত বা কাটাছেঁড়াজনিত ক্ষতস্থানে পচন নিবারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিসেপটিক মানবদেহের টিস্যুর কোনো ক্ষতি করে না।

∎∎ ডিসইনফেকট্যান্টের সংজ্ঞা: যেসব রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে জড় পদার্থকে জীবাণুমুক্ত করা হয় তাদের ডিসইনফেকট্যান্ট বলে। এগুলি মানবদেহের টিস্যুর পক্ষে ক্ষতিকর, তাই জড় পদার্থকে জীবাণুমুক্ত করতে এদের ব্যবহার করা হয়। ঘরদোর, বাথরুম, নর্দমা প্রভৃতি জীবাণুমুক্ত করতে ডিসইনফেকট্যান্ট ব্যবহার করা হয়।গাঢ়ত্বের ওপর নির্ভর করে একই পদার্থ অ্যান্টিসেপটিক এবং ডিসইনফেকট্যান্ট রূপে ব্যবহার করা যায়। যেমন-ফেনলের অতিলঘু দ্রবণ (02%)-কে অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে এবং গাঢ় দ্রবণকে ডিসইনফেকট্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।নীচে কতকগুলি সাধারণ অ্যান্টিসেপটিক সম্বন্ধে আলোচনা করা হল-

ফেনল জাতীয় পদার্থ (Phenolic compounds):–

ফেনল বা কার্বলিক অ্যাসিড: এটি একটি শক্তিশালী পচন নিবারক এবং রোগজীবাণু-নাশক। এটি জীবদেহের অতি সূক্ষ্ম জীবাণুদের নষ্ট করে পচন রোধ করে।

পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): ফেনলের প্রবল বিষক্রিয়ার জন্য আজকাল এর ব্যবহার সীমিত। এটি চর্ম, মিউকাস মেমব্রেন ও টিস্যুর মধ্যে দ্রুত শোষিত হয় বলে অনেক সময় জ্বালা, প্রচণ্ড ব্যথা, ক্ষয়ে যাওয়া, বমি, ডায়ারিয়া, দুর্বল শ্বাসপ্রশ্বাস প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।

2. কেসল: এটি একটি ফেনলজাতীয় অ্যান্টিসেপটিক। তবে প্রবল জ্বালা ও ক্ষয়কারী ক্রিয়ার জন্য এটি সাধারণত ব্যবহৃত হয় না। সাবান জলে ক্রেসলের দ্রবণকে লাইজল (lysol) বলে। এটি ডিসইনফেকট্যান্ট-রূপে ব্যবহৃত হয়।

3. ক্লোরোজাইলিনল: এটি একটি ফেনলজাতীয় অ্যান্টিসেপটিক, তবে এর বিষক্রিয়া কম এবং এটি গ্রাম পজিটিভ স্ট্রেপ্টোকক্কাস জীবাণুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকারী। এটি সাধারণত উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত করে ক্ষতস্থানে প্রয়োগ করা হয়। কাটাছেঁড়া, ক্ষত, ছোটোখাটো আগুনে পোড়া ও পোকার কামড়ে এটি ক্রিম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

4. ডেটল: এটি একটি পেটেন্ট ওষুধ। ডেটল হল অ্যালকোহলীয় সল (sol), যার মধ্যে ক্লোরোজাইলিনল ও টারপিনল মেশানো থাকে। আঘাত বা কাটাছেঁড়াজনিত ক্ষতস্থানে এবং রোগগ্রস্ত ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ রোধ করার জন্য ডেটল বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।

5. রেসরসিনল: m -ডাইহাইড্রক্সিবেঞ্জিনকে রেসরসিনল বলে। রেসরসিনলযুক্ত মলম বা লোশন অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহারে ত্বকে কম জ্বালা করে এবং এটি ত্বকে কোনো দাগ সৃষ্টি করে না।

(B) ক্লোরোহেক্সিডিন গ্লুকোনেট (Chlorohexedene gluconate)

এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিসেপটিক যা অনেক প্রকার গ্রাম-পজিটিভ ও গ্রাম-নেগেটিভ জীবাণুদের বিরুদ্ধে কার্যকারী। কাটাছেঁড়া, ক্ষত, ছোটোখাটো আগুনে পোড়া ও ফোড়ায় এটি ব্যবহৃত হয়।

স্যাভলন: এটি একটি পেটেন্ট ওষুধ। এটি ক্লোরোহেক্সিডিন গ্লুকোনেট এবং সেট্রিমাইড দ্রবণের মিশ্রণ। ছোটোখাটো আঘাতজনিত ক্ষত, কাটাছেঁড়া, ফোড়া, রোগীর ঘর ও তার জিনিস জীবাণুমুক্ত করতে এটি ব্যবহৃত হয়।

আয়োডিন (lodine):–এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিসেপটিক।

⇒ পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): কঠিন আয়োডিন ক্ষয়কারী পদার্থ। আয়োডিনের ঘন দ্রবণও ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকারক, কারণ এটি ত্বককে পুড়িয়ে দেয়, ফলে ফোসকা পড়ে।(D)

সেট্রিমাইড (Cetrimide)এটি একটি কোয়াটারনারি অ্যামোনিয়াম যৌগ। অ্যান্টিসেপটিক ছাড়া একে সংক্রমণরোধক (disinfectant) হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এটিকে মূলত ক্লোরোহেক্সিডিনের সলো মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়। মাথার খুসকি, চর্মরোগের মামড়ি ও জমাট আবরণ (crust) পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে সেট্রিমাইডের জলীয় দ্রবণ ব্যবহার করা হয়।

ফর্মালিন (Formalin)ফর্মালিন হল ফর্মালডিহাইডের 40% জলীয় দ্রবণ। সাবানের সঙ্গে ফর্মালিন মিশিয়ে লাইসোফর্ম (lysoform) প্রস্তুত করা হয়, যা অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে।

পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): সুস্থ চামড়ায় ফর্মালিন লাগালে ত্বকের উপরিভাগ শক্ত ও সাদাটে হয়ে যায় ও স্থানটি অসাড় বোধ হয়

বোরিক অ্যাসিড (Boric acid)এটি একটি মৃদু অ্যান্টিসেপটিক। সমপরিমাণ জল ও অ্যালকোহলে বোরিক অ্যাসিডের সম্পৃক্ত দ্রবণ বিষাক্ত নালি যা ও সার্জিক্যাল ক্ষততে ব্যবহার করা হয়।।পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): কোনো বড়ো ধরনের ক্ষতের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ বোরিক অ্যাসিড শোষিত হলে বমি, উদরাময়,স্বল্প মূত্র, ডার্মাটাইটিস প্রভৃতি রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।

ক্রিস্টাল ভায়োলেট (Crystal violet)এর অন্য নাম মেডিসিন্যাল জেনটিয়াম ভায়োলেট। এটি বেগুনি বর্ণের, গন্ধহীন, ক্রিস্টাল বা পাউডার। জীবাণুনাশক হিসেবে এটি স্ট্যাফাইলোকক্কাস জাতীয় ব্যাকটেরিয়াদের বিরুদ্ধে কার্যকারী। ক্ষত, ফোড়া ও চর্মের ছত্রাক সংক্রমণে এর 0.5% জলীয় দ্রবণ ব্যবহৃত হয়।

পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): এর বেগুনি বর্ণের জন্য চামড়া বিবর্ণ হয়ে যায়।

মারকিউরোক্রোম (Mercurochrome):==

মারকিউরোক্রোম একটি লাল বর্ণের কঠিন জৈব মার্কারিঘটিত যৌগ। মারব্রোমিন (merbromine)-এর বাণিজ্যিক নাম মারকিউরোক্রোম। এটি জলে দ্রাব্য এবং এর জলীয় দ্রবণের বর্ণ লাল হয়। এটির 1-2% দ্রবণ অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অজৈব মার্কারি যৌগের চেয়ে মারকিউরোক্রোম কম বিষাক্ত, তবে এর ব্যবহারে ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি হয়।

ইথানল (Ethanol)ইথানলের 40-90% জলীয় দ্রবণ অত্যন্ত কার্যকারী অ্যান্টিসেপটিক। এমন দ্রবণ ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিনকে সহজে বিনষ্ট করে। তবে মিউকাস ঝিল্লি বা সংবেদনশীল ত্বকে এর ব্যবহার উচিত নয়।

স্যালল: এর রাসায়নিক নাম ফিনাইল স্যালিসাইলেট। এটি গলার অসুখে অভ্যন্তরীণ অ্যান্টিসেপটিক-রূপে ব্যবহৃত করা হয়।

সাধারণ অ্যানালজেসিক (Common analgesics)

যেসব ওষুধ ব্যথা উপশম করে, তাদের অ্যানালজেসিক বা বেদনানাশক বলে। কতকগুলি বেদনানাশক ওষুধ আছে যেগুলি একই সঙ্গে জ্বর উপশমকারী হিসেবেও কাজ করে। যেসব ওষুষ জ্বরের উপশম করে তাদের বলে অ্যান্টিপাইরেটিক।

কতকগুলি অ্যানালজেসিক হল-অ্যাসপিরিন, অ্যানালজিন, প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন, ফিনাইল বিউটাজোন ইত্যাদি। এগুলি সবই নন-অপিঅয়েড, অর্থাৎ আফিমগাটির নয়। কয়েকটি আফিমঘটিত অ্যানালজেসিক হল মরফিন, পেন্টাজোমিন প্রভৃতি।

অ্যাসপিরিন (Aspirin):–

অ্যাসপিরিনের রাসায়নিক নাম হল অ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। এটি একইসলো বেদনা ও জ্বর উপশম করে। সেবনের পর এটি তন্ত্রে দ্রুত শোষিত হয়ে আর্দ্রবিশ্লেষিত হয়। আর্দ্রবিশ্লেষণে উৎপন্ন স্যালিসাইলিক আসিড সারা দেহের কলা ও কোশে ছড়িয়ে পড়ে।

ব্যবহার (Uses): দাঁত, মাথা, কান ও গা-হাতের ব্যথা, আঘাতজনিত প্রদাহ ও যন্ত্রণা ইত্যাদি কমানোর জন্য অ্যাসপিরিন ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়াও বহু রিউমেটিক রোগ, যেমন-পেশি বাত, নিউরাইটিস, স্পন্ডিলাইটিস প্রভৃতির মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের ব্যাথা কমানোর জন্যও অ্যাসপিরিন ব্যবহার করা হয়।

আঅ্যাসপিরিনপার্শ্বক্রিয়া (Side effects): —

এটি পাকস্থলীর উত্তেজনা বা ইরিটেশন (irritation) বাড়িয়ে অ্যাসিডের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। ফলে পেটে ব্যথা, পেট জ্বালা, বমি ও বমিভাব, রক্তবমি প্রভৃতির লক্ষণ দেখা দেয়। এর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে আলসার, অ্যানিমিয়া ইত্যাদি রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন ব্যবহার করার ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া দরকার। এদের ক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা বেশি হলে ঝিমুনি, শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুবিধা প্রভৃতি লক্ষ করা যায়। অ্যানালজিন (Analgin)এর অন্য নাম ডাইপাইরন (dipyron)। এটি অ্যামিডোপাইরিনের সোডিয়াম সালফোনেট।

আঅ্যানালজিন একটি শক্তিশালী ও কার্যকারী জ্বর ও ব্যথানাশক ওষুধ।

> ব্যবহার (Uses):

মাথাধরা, গা-হাত-পা ব্যথা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দিজ্বর বা অন্যান্য জ্বর প্রকৃতির ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।

পার্শ্বক্রিয়া (Side effects):— এর অতিরিক্ত ব্যবহারে রক্তে গ্র্যানুলোসাইট শ্বেতকণিকাগুলির (যথা-নিউট্রোফিল, ইওসিনোফিল ওবেসোফিল) পরিমাণ অনেক কমে যায়। প্যারাসিটামল (Paracetamol)এর রাসায়নিক নাম হল -অ্যাসিটাইল প্যারাঅ্যামিনোফেনল। ব্যথা ও জ্বর উপশমকারী হিসেবে এটি বহুল ব্যবহৃত হয়। যাদের অ্যাসপিরিন বা অন্য কোনো ব্যথা উপশমকারী ওষুধ সহ্য হয় না তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি উপযোগী ওষুধ।

ব্যবহার (Uses): প্যারাসিটামল সাধারণত মাথা, দাঁত ও কানের ব্যথা, পেশি বাত ও সাইনাসের ব্যাথায় ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, সাধারণ সর্নি (common cold) ইত্যাদি জনিত জ্বর ও মাথা-গা-হাতের ব্যথার উপশমের জন্যও এটি ব্যবহার করা হয়।

Applied Chemistry Important Notes And Mcq

পার্শ্বক্রিয়া (Side effects): প্যারাসিটামলের তেমন কোনো পার্শ্বক্রিয়া নেই, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে এটি লিভার (liver)-এর কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

একাদশ শ্রেণী রাসায়নিক বন্ধন Mock Test & Mcq —- Click Here

WBCHSE Official Website :- Click Here

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

Leave a Comment

error: Content is protected !!