চালর্স ডারউইন বিখ্যাত জীবন এর কিছু অসাধারণ মুহূর্ত || Powerful Famous Biologist charles darwin university বর্তমান /আধুনিক বিজ্ঞান এর যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার তার অন্যতম ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব।
বিবর্তনবাদের প্রবক্তা চার্লস ডারউইন ১৮০৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের শ্রুসবেরি অঞ্চলের এক সুশিক্ষিত ও ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম রবার্ট ডার-উইন। পেশায় তিনি ডাক্তার ছিলেন। ডারউইনের বয়স যখন ৮ বছর, তখন তার মা মারা যান। পিতার স্নেহ এবং বোনদের আদর-যত্নে তাঁর শৈশব কাটে।
ছোটবেলায় খুব দুষ্টু প্রকৃতির ছিলেন চার্লস ডারউইন। পড়াশুনার চেয়ে সে সময় তিনি প্রকৃতির মধ্যে বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন। নানা জাতের পোকামাকড়, ফড়িং, প্রজাপতি, পশুপাখির ছানা, ঝিনুক, গাছপালা, ফুল-ফল ইত্যাদি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতেন আর সে-সব সম্পর্কে নিজের লব্ধ জ্ঞান ও প্রাপ্ত তথ্য খাতায় লিখে রাখতেন।
ছেলের এই স্বভাব বদলাবার জন্য বাবা তাঁকে এডিনবরায় ডাক্তারী পড়তে পাঠালেন। ডাক্তারী তাঁর ভালো লাগলো না। এখানে ডারউইন তাঁর মনের মতো কয়েকজন বন্ধু পেলেন, যাঁরা তার মতই প্রকৃতিবিজ্ঞানী। তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্য তিনি খাতায় নোট করে রাখতেন।
বাবা এবারও হতাশ হয়ে ছেলেকে গীর্জার পাদ্রী করতে চাইলেন। সেইজন্য তিনি ডারউইনকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্ত্বে ভর্তি করে দিলেন। কিন্তু চার্লস ডারউইন সেখানে পড়তে গিয়েও পোকা-মাকড়, গাছপালা,ফসল পরীক্ষা করার স্বভাব ত্যাগ করলেন না। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ডারউইন ২২ বছর বয়সে ধর্মতত্বে ডিগ্রী লাভ করেন।
চার্লস ডারউইন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক হেনরে খুব প্রিয়পাত্র ছিলেন। তিনি ডারউইনকে ভূতত্ত্ববিদ হাটন, লাওয়েল প্রমুখের বই পড়ার উপদেশ দিলেন। একবার তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় সুযোগ এসে গেল অধ্যাপক হেনস্লের একটা প্রস্তাবে। ‘বীগল’ নামের একটা জাহাজ বিশ্বভ্রমণে বের হচ্ছে ১৮৩১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর নানা গবেষণা কাজের জন্য।
অধ্যাপক হেনসলের সুপারিশে সেই জাহাজের ক্যাপ্টেন চার্লস ডারউইনকে তাঁর সঙ্গে নিতে রাজি হলেন।অনেক সাগর-মহাসাগর, দ্বীপ-উপদ্বীপ ও মহাদেশের একপ্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে বেড়বার পরম সুযোগ লাভ করলেন তিনি যুবা বয়সে।
চার্লস ডারউইন দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে বেড়াবার সময় এক জায়গার পাখিদের সঙ্গে অন্য জায়গার পাখিদের যেমন মিল লক্ষ করলেন, তেমনি অমিলও লক্ষ করলেন। এরপর তিনি নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া তাহিতি, সেন্ট হেলেনা, আটলান্টিক দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ করে মনে-মনে সে-সবের ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে লাগলেন।
১৮৩৬ সালের ২রা অক্টোবর বীগল জাহাজে করে চার্লস ডারউইন দেশে ফিরে এলেন। দেশে ফিরে এসে তাঁর জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, প্রাপ্ত তথ্য ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পত্রিকায় প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখতে শুরু করলেন।
এক সময় তাঁর বিশ্ববিখ্যাত আলোড়ন সৃষ্টিকারী বই ‘অরিজিন অব স্পেসিস’ লেখা শেষ করে ফেললেন। কিন্তু তিনি সহসা বইটা প্রকাশ করতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু তাঁর চেয়ে কম বয়য়ি মালয় দেশের এক বিজ্ঞানীর কীট-পতঙ্গ বিষয়ে পত্র পেয়ে তিনি তাঁদের দু’জনের মতের মিল দেখে অবাক হয়ে গেলেন। বন্ধুরা তাঁকে তাঁর গবেষণালব্ধ বইটি সত্বর প্রকাশের জন্য পরামর্শ দিলেন। চার্লস ডারউইন তাই করলেন।
১৮৫৯ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর বিশ্বকাঁপানো বই ‘অরিজিন অফ স্পেসিস’ প্রকাশিত হয়। তাঁর এই গ্রন্থের মাধ্যমে যুগান্তকারী ‘বিবর্তন মতবাদ’ বৈজ্ঞানিক তথ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এক মাসের মধ্যে বইটি প্রথম সংস্করণ নিঃশেষ হয়ে যায়। বিশ্বের সভ্য শিক্ষিত দেশগুলোতে বইটির অনুবাদওপ্রকাশিত হতে থাকে।চার্লস ডারউইনের বিবর্তন মতবাদ অনুযায়ী বিশ্বের সকল প্রাণী এবং প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টি হঠাৎ একদিনে সৃষ্টি হয়নি। আস্তে আস্তে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কোটি-কোটি বছরের এই প্রক্রিয়া।
ডারউইনের এই মতবাদ বিভিন্ন ধর্মের মতবাদের সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী।খ্রীস্টান সমাজের পাদ্রীরা, ধর্মান্ধ ব্যক্তিরা তাঁর বক্তব্যের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের জগতে টাইকো ব্রাহে এবং গ্যালিলিও যেভাবে গোঁড়া খ্রীস্টানদের কাছ থেকে অবমাননা লাঞ্ছনা সহ্য করেছেন, টাইকো ব্রাহেকে যেভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো, ঠিক ততোটুকু না হলেও বিবর্তনবাদ প্রচারের জন্য ডারউইনকে নানা লাঞ্ছনা ও অপবাদ সহ্য করতে হয়েছে।
ডারউইনের মতবাদের সঙ্গে আধুনিকালের জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমত সৃষ্টি হলেও বিবর্তন মতবাদ যুগান্তকারী সত্যের ধারক হিসাবে এখনো বিবেচিত হয়।
১৮৮২ সালের ১৯শে এপ্রিল ৭৩ বছর বয়সে এই দুঃসাহসী বিজ্ঞানীর হৃদ রোগে মৃত্যু হয়।তাঁকে রাজকীয় মর্যাদায় নিউটন-এর পাশে লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবিতে সমাহিত করা হয়।
Walnut A Competitive And Entrance Examination cracker Institutions --- Detals Click Now
Cambridge University Admission Enqury :--
Click Now