প্রিয় ছাত্রছাত্রী অজকের পোষ্ট এর মাধ্যমে আমরা পরমানুর গঠন সম্পর্কে জানবো।
ভারতীয় দার্শনিক কণাদ এবং গ্রিক দার্শনিক ডিমোক্রিটাস বলেন পদার্থ মাত্রই কতকগুলি অবিভাজ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাদ্বারা গঠিত,ডিমোক্রিটাস এই ক্ষুদ্রতম কণাগুলির নাম দেন অ্যাটম (Atom)
কণাদ বলেন এই কণাগুলি পরমাণু। দার্শনিক তত্ত্ব থেকে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারায় পরমাণুকে প্রথম নিয়ে এলেন বিজ্ঞানী জন ডালটন।
1808 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ডালটন কী নিয়মানুসারে বিভিন্ন মৌলের পরমাণুগুলির রাসায়নিক সংযোগ ঘটে সেই সম্বন্ধে একটি তত্ত্ব প্রচার করেন।
এটিই ডালটনের পরমাণুবাদ তত্ত্ব নামে পরিচিত।
আইসোটোপ —একই মৌলের পরমাণুগুলির মধ্যে যাদের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক সমান কিন্তু ভর সংখ্যা বিভিন্ন অর্থাৎ প্রোটনের সংখ্যা একই কিন্তু নিউট্রনের সংখ্যার ভিন্নতার জন্য পারমাণবিক ভর ভিন্ন হয়তাদের আইসোটোপ বা সমস্থানিক মৌল বলে।
আইসোবার : —যে সব মৌলের পরমাণু গুলির পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক বিভিন্ন কিন্তু ভর সংখ্যা একই সেই সব মৌলের পরমাণু গুলিকে আইসোবার বলে।
আইসোটোন :–যে সব মৌলের পরমাণুগুলির নিউট্রনের সংখ্যা সমান কিন্তু তারা বিভিন্ন ভরসংখ্যা বিশিষ্ট তাদের আইসোটন বলে।
পরমাণুর দুটি অংশ—(1) পরমাণু-কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস [Nucleus (2) পরমাণুর নিউক্লিয়াস বহির্ভূত, অংশ [Extra Nuclear part] অর্থাৎ ইলেকট্রন-মহল।
Structure of Atom In Bengali
পরমাণু-কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস [Nucleus) :
পরমাণুর কেন্দ্রে অতি ক্ষুদ্র স্থান জুড়ে ধনাত্বক আধানগ্রস্ত যে অংশটিতে পরমাণুর প্রায় সব ভর কেন্দ্রীভূত থাকে তাকে পরমাণু কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস বলে।
তড়িৎ নিরপেক্ষ কণা নিউট্রন আবিষ্কারের পরে জানা গেছে নিউট্রন প্রোটনের সঙ্গে নিউক্লিয়াসে একত্রে ঘন সন্নিবিষ্ট অবস্থায় থাকে।
প্রোটন ও নিউট্রন কণাগুলিকে একসঙ্গে নিউক্লীয়ন (Nucleons) বলে।
এই কণাগুলি একত্রে পরমাণুর খুব কম আয়তন অধিকার করে কিন্তু পরমাণুর মোট ভর হল নিউক্লিয়াসের ভর
অর্থাৎ প্রোটন ও নিউট্রনের মোট ভর। কারণ ইলেকট্রনের ভর নগণ্য।
অর্থাৎ, পরমাণুর ভর = প্রোটনের ভর + নিউট্রনের ভর নিউক্লিয়াসের আয়তন খুব কম হওয়ায় এর ঘনত্ব খুব বেশি।
Structure of Atom In Bengali
পরমাণুর মধ্যে সবচেয়ে সুস্থিত অংশ নিউক্লিয়াস।নিউক্লীয় বলই এর সুস্থিতির কারণ।
•পারমাণবিক সংখ্যা = নিউক্লিয়াসে মোট প্রোটনের সংখ্যা = নিউক্লিয়াস বহির্ভূত ইলেকট্রনের সংখ্যা।
ভরসংখ্যা:-কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যতগুলি প্রোটন ও নিউট্রন থাকে তাদের মিলিত সংখ্যাকে ঐ পরমাণুর ভর সংখ্যা বলে।
অর্থাৎ ভর সংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা।
একটি প্রোটন কণা একটি ইলেকট্রন কণার থেকে 1837 গুণ ভারী। প্রোটন একটি ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত কণা।
একটি প্রোটনের তড়িতের পরিমাণ একটি ইলেকট্রন কণার তড়িৎ-এর পরিমাণের সমান ও বিপরীত।
•প্রত্যেকটি পরমাণুর কেন্দ্রে ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত কণা যেখানে কেন্দ্রীভূত থাকে তাকে নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রক বলে।
• নিউক্লিয়াসের ব্যাস পরমাণুর ব্যাসের প্রায় এক লক্ষ ভাগের একভাগ মাত্র।
•হালকা ধাতু বেরিলিয়ামকে কণার দ্বারা আঘাত করলে এক ধরনের নিস্তড়িৎ কণার জন্ম হয় যা নিউট্রন কণা নামে অভিহিত।
•নিউট্রন কণাটির ভর প্রোটন কণার ভরের তুলনায় সামান্য বেশি।
•1945 সালে এর বিস্ফোরক ও ধ্বংসাত্মরূপ জাপানের দুটি শহর হিরোসিমা ও নাগাসাকি প্রত্যক্ষ করেছিল।
•ডালটনের পরমাণু ছিল অবিভাজ্য পরে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বা
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিভিন্ন পরীক্ষার দ্বারা জানা যায় যে পরমাণু ভাঙা যায়। পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রনের অস্তিত্ব বর্তমান।
•নিউট্রন আবিষ্কার হওয়ার পরে জানা যায় নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন কণা একত্রে থাকে এবং এদের নিউক্লীয়ন (Nucleon) বলে।
•যে সব মৌলের পরমাণুর সবচেয়ে বাহিরের কক্ষে ৪ টি ইলেকট্রন থাকে তাদের নিষ্ক্রিয় মৌল বলে।
যেমন- নিয়ন, আর্গন, জেনন ইত্যাদি। এই সমস্ত মৌল সহজে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে না।
সাধারণত প্রত্যেক পরমাণুর সবচেয়ে বাহিরেকক্ষে ৪ টির বেশি ইলেকট্রন থাকতে পারেনা।
যেমন—কোনো পরমাণুর M কক্ষপথ যদি সবচেয়ে বাহিরের হয় তবে ঐ কক্ষে ৪ টির বেশি ইলেকট্রন থাকে না।
যদিও ঐ কক্ষে সর্বাধিক 18 টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।
ব্যতিক্রম — হিলিয়াম পরমাণুর ক্ষেত্রে বাহিরের কক্ষে 29 ইলেকট্রন থাকে।
- পরমাণু এর গঠন এর pdf নিতে — Click Here
- WBBSE এর অফিসিয়াল নোটিফিকেশন পেতে —Click Here