ছোটবেলায় আমরা সবাই না বুঝেই সেই জিনিসগুলো মুখস্থ করে থাকি, আমিও করেছিলাম । মুখস্থ না করে প্রথম থেকে বুঝে পড়বো যাতে ভবিষ্যতে কেউ ঠকাতে না পারে। আসুন একবার সবাই মিলে ভেবে বোঝার চেষ্টা করি ও যাদের এ বিষয়ে কোনো চিন্তা ভাবনাই মাথায় আসেনি তাদেরকে একটু জিজ্ঞেসা করে দেখি । আজকে আমরা ১ এ চন্দ্র থেকে ১০ এ দিক পর্যন্ত প্রত্যেকটি জিনিস এর খুঁটিনাটি পড়বো।
1.এক-এ- চন্দ্র(একটি চাঁদ)
2.দুই-এ- পক্ষ(কৃষ্ণ পক্ষ, শুক্ল পক্ষ)
ব্যাখ্যা::- অমাবস্যার পরদিন থেকে চাঁদের আকার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং অবশেষে পৌঁছায় পূর্ণিমাতে,
এই অমাবস্যার পরদিন থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় শুক্লপক্ষ।
হিন্দু ধর্ম মতে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা হয়ে থাকে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে।
আবার পূর্ণিমার পরদিন থেকে চাঁদের আকার ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে এবং অবশেষে পৌঁছায় অমাবস্যায়,
এই পূর্ণিমার পরদিন থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় কৃষ্ণপক্ষ।
3.তিন-এ- নেত্র(২টি চর্ম চক্ষু ও একটি দিব্য জ্ঞাণ চক্ষু)
ব্যাখ্যা::-উপরের দুটি ক্ষেত্রে পরিষ্কার বোঝা গেলেও তিন নেত্র বলার সময় দুটি চোখ খুঁজে পাওয়ার পর আরেকটি চোখ খুঁজে পাওয়া যায় না।
Full meaning of এক এ চন্দ্র দুইয়ে পক্ষ
কিন্তু দর্শন অনুযায়ী এই তৃতীয় চোখটি হলো জ্ঞানচোখ।
4.চার-এ- বেদ(ঋক, সাম, যজু ও অথর্ব)
ব্যাখ্যা:-বেদ হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থ। বেদ কথাটির অর্থ হলো জ্ঞান। ইংরজিতে veda শব্দটি এসেছে vidi থেকে যার অর্থ knowledge, এই বেদে রয়েছে ১০২৮টি স্তোত্র। হিন্দু ধর্মমতে বেদ মানুষের রচনা নয় স্বয়ং ঈশ্বরের বাণী। এইজন্য বেদকে “নিত্য ও অপৌরুসেও” বলা হয়। প্রাচীন ঋষিরা ঈশ্বরের বাণী শ্রবণ করেছিলেন বলে বেদের ওপর নাম শ্রুতি।
5.পাঁচ-এ- পঞ্চবাণ(সম্মোহন, উন্মাদন, শোষণ, তাপন ও স্তম্ভন এই পাঁচটি কামবাণ)
ব্যাখ্যা::-পঞ্চবান হলেন মদনদেব, কামের অধিস্টাতা দেবতা।
6.ছয়-এ- ঋতু(গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত এবং বসন্ত)
7.সাত-এ- সমুদ্র(লবণ, ইক্ষু, সুরা, সর্পি, দধি, দুগ্ধ, জল)
8.আট-এ- অষ্টবসু(ভব, ধ্রু সোম, বিষ্ণু অনিল, অনল, প্রত্যুষ, প্রভাস- এরা দক্ষ কন্যা বসুর আট পুত্র)
ব্যাখ্যা::-হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী এই আটজন বসু হলেন দেবতা। ধর্মের ঔরসে এবং দক্ষের কন্যা বসুর গর্ভে এরা জন্মগ্রহণ করেন। অষ্টবসুরা মূলত ইন্দ্রের অনুচর হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে একবার বসুগণ বশিষ্ঠের গাভী নন্দিনীকে হরণ করায় বশিষ্টের কোপে গঙ্গার গর্ভে শান্তনুর পূত্ররুপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।বসুরা মানুষ রূপ পাওয়ার জন্য গঙ্গার শরনাপন্ন হয়েছিলেন।
Full meaning of এক এ চন্দ্র দুইয়ে পক্ষ
তাদের অনুরোধে শান্তনুর ঔরসে গঙ্গার গর্ভে একের পর এক জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু জন্ম হওয়ার পরই গঙ্গা তাদের জলে নিক্ষেপ করেন। ফলে তারা মানব জন্ম থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু শান্তনুর বাধায় গঙ্গা অষ্টম পুত্রকে ভাসিয়ে দিতে পারেননি ,কিন্তু তিনি শান্তনু কে ত্যাগ করে স্বর্গে প্রত্যাবর্তন করেন। এই অষ্টম পুত্রই হলেন দ্যু বসু মানুষরূপে যিনি দেবব্রত এবং তিনিই হলেন মহাভারতের ভীষ্ম।
9.নয়-এ-নবগ্রহ(রবি, চন্দ্র, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রাহু, কেতু)
ব্যাখ্যা::-সেখানে তারা সূর্য, চন্দ্র, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি- এই ৭ টিকেই গ্রহ বলে সাব্যস্ত করেছিল। সেই যুগে এরকম ধারনা এবং প্রচার আরো অনেকেই করেছিল। তবে এই ৭টির পাশাপাশি হিন্দু জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদেরা অন্য আরো দুটি গ্রহের কথা কল্পনা করেছিল, যাদের নাম – রাহু এবং কেতু। এই হলো ৭ আর দুইয়ে নয়, অর্থাৎ নব গ্রহ।
10.দশ-এ-দিক(পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ, ঈশান, অগ্নি, নৈঋত, বায়ু, ঊর্ধ্ব ও অধঃ)
ব্যাখ্যা::-ঈশান – উত্তরপূর্ব।
বায়ু – উত্তরপশ্চিম।
অগ্নি – দক্ষিণপূর্ব।
নৈঋত- দক্ষিনপশ্চিম।
ঊর্ধ্ব – মাথার উপর।
অধঃ – পায়ের তলা।
Walnut Academy official link — Click Here
Navodaya School Official Website—- Click Here