shree shree Ram Krishna
জন্ম ——shree Ram Krishna
shree Ram Krishna
১৮৩৬ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে ৯৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কামারপুকুর গ্রামে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্ম হয়। বাবা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় ও মা চন্দ্রমণি দেবী তাঁদের ভক্তিনিষ্ঠা ও সত্যপরায়ণতার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। যদিও আর্থিক সচ্ছলতা তাঁদের ছিল না। শ্রীহরির আশীর্বাদে জন্ম বলে তাঁরা এই শিশুটির নাম রাখেন গদাধর। গ্রামের সবার প্রিয় ছিল গদাধর। আর পাঁচজন ছেলের সঙ্গে তাঁর তফাৎও ছিল নজরে পড়ার মতো। সাংসারিক কাজকর্ম বা রোজগেরে লেখাপড়ায় তাঁর মন ছিল না। বাকি ছেলেদের মতো গতানুগতিক লেখাপড়া না করে সে নিজের মতো করে বিদ্যার্জন করত। গদাধর খুব সুন্দর গাইতে পারত, ছবি আঁকা আর মূর্তি গড়াতেও সে পটু ছিল। এসব ছাড়া গদাধরের প্রিয় কাজ ছিল সাধুসঙ্গ করা। গ্রামে যখনই কোনো সাধু-সন্ত আসতেন, গদাধর তাঁদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলত, গল্প করত। গদাধর প্রায়ই আপন ভাবে বিভোর হয়ে যেত। এই ভাব যে ঐশ্বরিক চেতনারই লক্ষণ, সে কথা তখনও মানুষের কাছে ধরা পড়েনি। গদাইয়ের যখন দশ বছর বয়স, তখন একদিন কালো মেঘের বুকে সাদা বকের পাঁতি উড়ে যেতে দেখে তার আকস্মিক ভাবসমাধি হয়। এর পরে আরো বহুবার সমাধির অভিজ্ঞতা তার জীবনে আসবে। সাত বছর বয়সে গদাধর তার বাবাকে হারায়; এর পর থেকে তার সংসারবিমুখতা আরও বেড়ে যায়।
প্রশ্ন উত্তরপর্ব—
১। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণ কবে এবং কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে কামারপুকুরে জন্মগ্রহণ করেন।
২। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণের পিতা ও মাতার নাম কী ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণের পিতার নাম ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম চন্দ্রমণি দেবী।
৩। প্রঃ ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের পূর্ব ভিটা কোথায় ছিল?
উঃ। ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের পূর্ব ভিটা ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার দেরে গ্রামে।
৪। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণের ছোটোবেলার নাম কী ছিল?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণের ছোটোবেলার নাম ছিল গদাধর।
৫। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণের পৈতার ভিক্ষা-মা কে ছিলেন?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণের পৈতার সময় ভিক্ষ-মা ছিলেন তাঁর দাই-মা ধনী কামারনী।
৬। প্রঃ শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কই ভাই-বোন ছিলেন?
উঃ। তাঁরা পাঁচ ভাই-বোন ছিলেন। বড়ো ভাই ছিলেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, মেজভাই ছিলেন রামেশ্বের চট্টোপাধ্যায়। বড় দিদি ছিলেন কাত্যায়নী এবং শ্রীরামকৃষ্মের বোন ছিলেন সর্বমঙ্গলা।
৭। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণ কত বছর বয়সে কলকাতায় আসেন ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ সতের বছর বয়সে কলকাতায় আসেন। ।
৮| প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ম কলকাতায় এসে কী করতেন?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ ঝামাপুকুর টোলে পড়তেন এবং বাড়ি বাড়ি ঠাকুর সেবাও করতেন।
৯। প্রঃ দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠা কে কবে করেন?
উঃ। রানি রাসমণি, ১২৬২ সালের ১৮ই জ্যৈষ্ঠ দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
১০। প্রঃ দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের প্রথম পূজারি কে ছিলেন?
উঃ। দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরের প্রথম পূজারি ছিলেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়।
১১। প্রঃ দক্ষিণেশ্বরের কালীমূর্তি সাজাতেন কে?
উঃ। দক্ষিণেশ্বরের কালীমূর্তি সাজানোর দায়িত্বে ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ।
১২। প্রঃ রামকুমারের পর দক্ষিণেশ্বরের মা কালীর পূজারি কে ছিলেন?
উঃ। রামকুমারের পর শ্রীরামকৃষ্ণ পূজারির পদে নিযুক্ত হলেন।
১৩। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্মের সাহায্যকারী কে ছিলেন?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বকর্মের সাহায্যকারী ছিলেন তাঁর ভাগনে হৃদয়।
১৪। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ম ধ্যান করতেন কোথায়?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ কালীবাড়ির উত্তরদিকে পঞ্চবটীর পাশের জঙ্গলে ধ্যান করতেন।
১৫। প্রঃ কালীবাড়ির লোকেরা শ্রীরামকৃষ্মকে কী বলে ডাকতেন ?
উঃ। কালীবাড়ির লোকেরা শ্রীরামকৃষ্ণকে ছোটো ভট্টাচার্য বলে ডাকতেন।
১৬। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণের পর কালীবাড়ির পূজারি কে হলেন?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণের পর তাঁর খুড়তুতো দাদা রামতারক কালীবাড়ির পূজারি হন।
১৭। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্মের বিবাহ কার সঙ্গে, কত বছর বয়সে হয়েছিল ? উঃ। জয়রামবাটীর রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের পাঁচ বছরের কন্যা সারদামণির সঙ্গে চব্বিশ
shree shree Ram Krishna
বছরের শ্রীরামকৃষ্ণের বিবাহ হয়।
১৮। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্মের প্রথম গুরু কে ছিলেন ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্মের প্রথম গুরু ছিলেন ভৈরবী ব্রাহ্মণী।
১৯। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ম কার থেকে মুসলমান মতে সাধনের পথ শিখেছিলেন?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ এক মুসলমান ফকির গোবিন্দর কাছ থেকে মুসলমান মতে সাধনতত্ত্ব শিখেছিলেন।
২০। প্রঃ সব সাধনার শেষে শ্রীরামকৃষ্ণ কাকে জগন্মাতা জ্ঞানে পূজা করলেন। উঃ। সব সাধনার শেষে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর পত্নী সারদাদেবীকে জগন্মাতা জ্ঞানে পূজা করলেন।
shree Ram Krishna
২১। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে যে সকল ভক্ত সমাগম হয়েছিল তাঁদের কয়েকজনের নাম কী??
উঃ। কেশবচন্দ্র সেন, মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (শ্রীম), গিরিশচন্দ্র ঘোষ, নরেন্দ্রনাথ দত্ত, (স্বামী বকানন্দ), রাখালচন্দ্র ঘোষ (স্বামী ব্রহ্মানন্দ), শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী (স্বামী সারদানন্দ), বাবুরাম,
যোগেন, হরিপ্রসন্ন, সাধু প্রিয়নাথ (মন্মথ), বিনোদ, বালির শশী প্রমুখ।
২২। প্রঃ ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’-কার লেখা?
উঃ। ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত’-মহেন্দ্ৰনাথ গুপ্ত (শ্রীম)-র লেখা।
২৩। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ম কোন্ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
২৪। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ণ কোথায় দেহত্যাগ করেন ?
উঃ। শ্রীরামকৃষ্ণ কাশীপুরের এক বাগানবাড়িতে দেহত্যাগ করেন।
২৫। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্ম কবে দেহত্যাগ করেন?. উঃ। শ্রীরামকৃষ্ম ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট দেহত্যাগ করেন।
২৬। প্রঃ শ্রীরামকৃষ্মের কয়েকটি বাণী লেখো : উঃ। (ক) ‘যত মত, তত পথ’।
(খ) ঈশ্বরই বস্তু, আর সবই অবস্তু’।
(গ) ‘সাকার নিরাকার দুই-ই সত্য’।
(ঘ) ‘নিবৃত্তিই ভালো, প্রবৃত্তি ভালো নয়’। ধর্মের স্থাপক তুমি, সর্বধর্মরূপী!
শ্রেষ্ঠ অবতার রামকৃষ্ণ তব পদে প্রণাম আমার।
শ্রীরামকৃষ্ণ প্রণাম মন্ত্রঃ —ওঁ স্থাপকায় চা ধর্মস্য সর্বধর্ম স্বরূপিণে অবতার বরিষ্ঠায়
রামকৃষ্মায় তে নমঃ ।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতম্ ———————————- তব কথামৃতং তপ্তজীবনং, কবিভিরীড়িতং কল্মষাপহম্ ৷ শ্রবণমঙ্গলং শ্রীমদাততং, ভুবি গৃণন্তি যে ভূরিদা জনাঃ ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন।সহাস্যবদন, বালকমূর্তি। উত্তরাস্য হইয়া বসিয়াছেন। ব্রাহ্মভক্তদের সঙ্গে আনন্দে আলাপ করিতেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ(ব্রাহ্ম ও অন্যান্য ভক্তদের প্রতি)–তোমরা ‘প্যাম’ ‘প্যাম’ কর; কিন্তু প্রেম কি সামান্য জিনিস গা? চৈতন্যদেবের ‘প্রেম’ হয়েছিল।
*প্রেমের দুটি লক্ষণ।* প্রথম–জগৎ ভুল হয়ে যায়। এত ঈশ্বরেতে ভালবাসা যে বাহ্যশূন্য! চৈতন্যদেব “বন দেখে বৃন্দাবন ভাবে, সমুদ্র দেখে শ্রীযমুনা ভাবে।”
“দ্বিতীয় লক্ষণ– নিজের দেহ যে এত প্রিয় জিনিস, এর উপরও মমতা থাকবে না, দেহাত্মবোধ একেবারে চলে যাবে। “ঈশ্বরলাভের কতকগুলি লক্ষণ আছে। যার ভিতর অনুরাগের ঐশ্বর্য প্রকাশ হচ্ছে তার ঈশ্বরলাভের আর দেরি নাই।
কিছু জিজ্ঞাসা ——
shree shree Ram Krishna
👉🌎🌴গিরিশ (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)—আচ্ছা মহাশয়, মনটা এত উঁচু আছে, আবার নিচু হয় কেন? শ্রীরামকৃষ্ণ—সংসারে থাকতে গেলেই ও-রকম হয়। কখনও উঁচু, কখনও নিচু। কখনও বেশ ভক্তি হচ্ছে, আবার কমে যায়। কামিনী-কাঞ্চন নিয়ে থাকতে হয় কিনা, তাই হয়। সংসারে ভক্ত কখন ঈশ্বরচিন্তা, হরিনাম করে; কখন বা কামিনী-কাঞ্চনে মন দিয়ে ফেলে। যেমন সাধারণ মাছি——কখন সন্দেশে বসছে, কখন বা পচা ঘা বা বিষ্ঠাতেও বসে। “ত্যাগীদের আলাদা কথা। তারা কামিনী-কাঞ্চন থেকে মন সরিয়ে এনে কেবল ঈশ্বরকে দিতে পারে; কেবল হরিরস পান করতে পারে। ঠিক ঠিক ত্যাগী হলে ঈশ্বর বই তাদের আর কিছু ভাল লাগে না। বিষয়কথা হলে উঠে যায়; ঈশ্বরীয় কথা হলে শুনে। ঠিক ঠিক ত্যাগী হলে নিজেরা ঈশ্বরকথা বই আর অন্যবাক্য মুখে আনে না।” “মৌমাছি কেবল ফুলে বসে—মধু খাবে বলে। অন্য কোন জিনিস মৌমাছির ভাল লাগে না।” এবং গিরিশ দক্ষিণের ছোট ছাদটির উপর হাত ধুইতে গেলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—ঈশ্বরের অনুগ্রহ চাই, তবে তাঁতে সব মন হয়। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত থেকে সংগৃহীত।।
shree shree Ram Krishna,shree shree Ram Krishna,shree shree Ram Krishna