প্রাচীন ভারতের বেদ সম্পর্কে অজানা তথ্য ||The Vedas Unveiled: Insights into Indian Philosophy”|| Crazy 4 vedas

ধর্ম গ্রন্থ কী??যে-গ্রন্থে ধর্ম ও কল্যাণময় জীবনের কথা বলা হয়েছে তাকে ধর্মগ্রন্থ বলে। বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, শ্রীশ্রীচণ্ডী প্রভৃতি আমাদের উল্লেখযোগ্য ধর্মগ্রন্থ। (প্রাচীন ভারতের বেদ সম্পর্কে অজানা তথ্য ||The Vedas Unveiled: Insights into Indian Philosophy”How Many Vedas are there)

Table of Contents

বেদ শব্দের অর্থ কি??

বেদ আমাদের আদি ও প্রধান ধর্মগ্রন্থ। বেদ চিরন্তন ও শাশ্বত। ‘বেদ’ মানে জ্ঞান। প্রাচীন ঋষিদের ধ্যানে পাওয়া পবিত্র জ্ঞান। এ জ্ঞান হচ্ছে জগৎ-জীবন ও তার উৎস পরমপুরুষ, ব্রহ্ম বা ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞান। বেদকে কেন্দ্র করে রচিত ধর্মভিত্তিক বিশাল সাহিত্যকে বলা হয় বৈদিক সাহিত্য। আর মহাভারতের অংশবিশেষ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা সংক্ষেপে গীতা হিসেবে পৃথক গ্রন্থের মর্যাদা পেয়েছে।

যজ্ঞ কি এবং কেন করা হয়??

গীতায় কর্মকে “যজ্ঞ” বলা হয়েছে। এখানে রয়েছে কর্ম, জ্ঞান ও অভিন্ন অপূর্ব সমন্বয় এবং বাস্তব জীবনে চলার প্রয়োজনীয় নৈতিক শিক্ষা ও উপদেশ।

ভারতের সাহিত্য প্রাচীন ভারতের হিন্দু সাহিত্য চারটি বেদ (1500 খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে 1000 খ্রিস্ট পূর্বাব্দের মধ্যে সংকলিত) প্রতিটি বেদের সঙ্গে ব্রাহ্মণ সমূহ, উপনিষদ সমূহ ও আরণ্যক সমূহ অনুসারী।

1. ঋকবেদ 1500-1200 খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে সংকলিত।ঋক বেদ সর্বাধিক প্রাচীন বেদ।

এটিতে 1028টি ভিন্ন সংস্কৃত শ্লোক আছে 10টি পুস্তকে সজ্জায়িত করা, যাকে মন্ডল বলা হয়।

এগুলি ভিন্ন ভিন্ন সময়ের ও দৈর্ঘ্যের।প্রতিটি মন্ডলে অনেকগুলি শুক্ত বা স্তোত্র রয়েছে, যেগুলি বেশিরভাগই আহুতি সম্পর্কিত।ঝব্বেদের সম্পূর্ণ স্তোত্রগুলি বিভিন্ন দেবতার প্রতি উৎসর্গীকৃত, বিশেষত তাদের মূল আরাধ্য ইন্দ্রের প্রতি।

ঋকবেদে উল্লিখিত অন্যান্য দেবতা হলেন অগ্নি (আগুনের দেবতা), বরুণ (জলের দেবতা), রুদ্র (বাতাস/ঝড় এর দেবতা), আদিত্য (সূর্যদেবের এক রূপ), বায়ু (বাতাসের দেবতা) এবং অশ্বিনী ভ্রাতৃদ্বয়। অনেকগুলি স্তোত্র স্ত্রী দেবতাদের প্রতিও উৎসর্গীকৃত। যেমন-ঊষা (প্রাতঃকালের দেবী), পৃথ্বী (মাটির দেবী) এবং বাক্ (বাক্যের দেবী)।

2. সামবেদ:– এর মূল বিষয় হল গান ও সুর প্রায় 1875টি স্তোত্র সমন্বিত।এটিকে ‘বুক অফ চান্টস’ ও বলা হয়।

3. যজুর্বেদ:—এই বেদটির বিষয়বস্তু হল বিভিন্ন আহুতির নিয়মাবলী ও মন্ত্র সম্পর্কিত।

4. অথর্ববেদ:—এটিকে ব্রহ্ম বেদও বলা হয়।

দুজন ঋষি অথর্বন এবং অঙ্গীরা’র প্রতি এ পুস্তক রচনার মূল কৃতিত্ব অর্পিত হয়। প্রাচীনকালের এই কারণে এটিকে ‘অথর্বনাঙ্গীরা’ও বলা হত।এটি মূলত বিভিন্ন রোগ ব্যাধির চিকিৎসা গ্রন্থ।

বেদকে সম্পূর্ণ রূপে বুঝতে গেলে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রচনাগুলিকে যেমন ‘শিক্ষা’ (Education), ‘নিরুক্ত’ (etymology on the origin on words), ‘ছন্দ’, (metrices in Sanskrit Grammer), ‘জ্যোতিষ’ (Astronomy) and ‘ব্যাকরণ’ (Grammer)। পরবর্তীকালে, বহু বিদগ্ধ মানুষ এই বিষয়গুলি নিয়ে টিকা রচনা করেছেন যেগুলোকে সূত্র বলা হয়। এগুলো সাধারণত উপদেশমূলক যা সাধারণ নীতি হিসাবে সামাজিক ব্যবস্থাকে পরিচালিত করে।

বেদাঙ্গ:—

বেদাঙ্গগুলি বেদের শাখা বা বাহু এগুলি মূল বেদের সম্পূরক রচনা।

ছটি বেদাঙ্গ হল:—–

শিক্ষা (Education)কল্প (Ritual)ব্যাকরণ (Grammer)নিরুক্ত (Etymology)ছন্দ (Metrices)জ্যোতিষ (Astronomy)উপবেদ সমূহচারটি উপবেদ হলআয়ূর (Medicine)শিল্প (Sculpture)গন্ধর্ব (Music)ধনুর (Warfare)

ব্রাহ্মণ :– যিনি নিজে বেদ পড়েন ও পড়ান।। বেদ মন্ত্রের অর্থ করতে পারেন তিনিই ব্রাহ্মণ।। কিন্তু বর্তমানে ভারতবর্ষের হিন্দুদের মধ্যে যে পদবিধারী কথিত ব্রাহ্মণ দেখা যায় তারা কেউই ব্রাহ্মণ নয়।।

হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, ব্রাহ্মণের জন্ম স্রষ্টার মুখ থেকে হয়েছে।

ব্রাহ্মণ সমূহ প্রতিটি বেদের সহচর্যে একটি করে ব্রাহ্মণ আছে:

ঋকবেদ :–আত্রেয় ব্রাহ্মণ, কৌশিতকি ব্রাহ্মণ

সামবেদ :–তাদিয়া মহাব্রাহ্মণ, সদ্‌বিংশা ব্রাহ্মণ

যজুর্বেদ :–তৈওরিয় ব্রাহ্মণ,শতপথ ব্রাহ্মণ

অথর্ববেদ: —গোপথ ব্রাহ্মণ

জন্মন জায়তে শূদ্রঃ সংস্কারাৎ দ্বিজ উচ্যতে ।

বেদাভ্যাসাৎভবেদ বিপ্রো ব্ৰহ্ম জানাতি ব্রাহ্মণ: ।।

( জীব শূদ্র হয়ে জন্মান, সংস্কার দ্বারা দ্বিজ , বেদ পাঠের দ্বারা বিপ্র আর ব্রম্ভ জ্ঞানের দ্বারা ব্রাম্ভন হন )

ব্যাখ্যা :—অর্থাৎ জীব যখন জন্ম গ্রহণ করেন তখন তাহার আত্মা পরমাত্মা স্বরূপেতে কোন বোধ থাকে না সেই অবস্থাকেই শূদ্র বলে । এবং যখন সেই জীবের মধ্যে সুসংস্কার সাধিত হয় তখন তাহাকে দ্বিজ বলা হয় । এবং সেই জীব যখন বেদ পাঠ করেন তখন তাহাকে বিপ্র বলা হয়, অর্থাৎ যখন জ্ঞান উপার্জন করেন তখন বিপ্র সংজ্ঞাযিত করা হয়। এবং যখন জীব ব্রহ্মকে জানেন তখন তাহাকে ব্রাহ্মণ সংজ্ঞাযিত করা হয়, এবং জীবের যখন পূর্ণ পরব্রহ্ম আত্মা গুরুর উপাসনার অদ্বৈত জ্ঞান উদয় দ্বারা জীবাত্মা ও পরমাত্মার অর্থাৎ পুর্ণ পরব্রহ্ম জ্যোতিঃস্বরূপ আত্মাতে অভেদ হইয়া যান, তখন ঐ অবস্থাপন্ন জীবকে ব্রাহ্মণ বলা হয়।

Our Official Facebook Page---Join Now
মা সারদা দেবীর বাণী পড়তে ক্লিক করুন -- Click Now 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

Leave a Comment

error: Content is protected !!
Narendrapur Ramakrishna Mission Gk